অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার

একজন অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে ওয়েব ও মোবাইল প্লাটফর্ম এবং নির্দিষ্ট অপারেটিং সিস্টেমের জন্য অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেন। চ্যালেঞ্জিং এ খাতে কাজ করতে চাইলে আপনাকে কম সময়ের মধ্যে নতুন কিছু শেখায় দক্ষ হতে হবে।

এক নজরে একজন অ্যাপ ডেভেলপার

সাধারণ পদবী: অ্যাপ ডেভেলপার, অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার
বিভাগ: তথ্যপ্রযুক্তি
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি, বেসরকারি, প্রাইভেট ফার্ম/কোম্পানি
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল-টাইম, পার্ট-টাইম
লেভেল: এন্ট্রি, মিড, টপ
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য অভিজ্ঞতা সীমা: ০ – ২ বছর
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য গড় বেতন: ৳২৫,০০০ – ৳৩৫,০০০
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স: প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ
মূল স্কিল: কোডিং, ক্রস প্লাটফর্ম অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে পরিষ্কার ধারণা
বিশেষ স্কিল: বিশ্লেষণী ক্ষমতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা

একজন অ্যাপ ডেভেলপার কোথায় কাজ করেন?

  • সরকারি প্রতিষ্ঠানে বা প্রজেক্টে, যেমনঃ সরকারি সার্ভিস দেবার অ্যাপ্লিকেশন তৈরির প্রজেক্ট
  • বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বা প্রজেক্টে
  • ব্যাংক ও আর্থিক সেবার প্রতিষ্ঠানে
  • আইটি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে
  • আউটসোর্সিং ফার্মে
  • ডিজিটাল প্রোডাক্ট/সার্ভিস প্রস্তুতকারী কোম্পানিতে

একজন অ্যাপ ডেভেলপারের কাজ কী?

  • অ্যাপ্লিকেশনের ফিচার ও অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয় (যেমন: অপারেটিং সিস্টেম) সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা
  • সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত দিক নির্ধারণ করা
  • ডিজাইন অনুযায়ী কোডিংয়ের মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশনের প্রাথমিক ভার্সন তৈরি করা ও তা পরীক্ষা করা
  • অ্যাপ্লিকেশনের প্রাথমিক ভার্সনে কোন ভুল ধরা পড়লে তা ঠিক করা
  • নির্দিষ্ট অপারেটিং সিস্টেমের জন্য অ্যাপ রিলিজ করার ব্যবস্থা নেয়া (যেমন: গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপ আপলোড দেয়া)
  • নিয়মিত অ্যাপ আপডেট করা

কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয় একজন অ্যাপ ডেভেলপারের?

সাধারণত কম্পিউটার সায়েন্স/ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা ইনফরমেশন টেকনোলজিতে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি চাওয়া হয়।

অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এমন একটি খাত যেখানে ডিগ্রির চেয়ে আপনার কাজের দক্ষতা থাকা বেশি জরুরি। অনেকে শখের বশে প্রোগ্রামিং করে কার্যকরী প্রজেক্ট তৈরি করেন। এক্ষেত্রে ডিগ্রি ছাড়াই কাজ পেতে পারেন তারা।

একজন অ্যাপ ডেভেলপারের কোন কোন দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

প্রজেক্টের উপর টেকনিক্যাল জ্ঞানের ধরন নির্ভর করে। এরপরও সাধারণ উদাহরণ হিসাবে নিচের স্কিলগুলোর কথা বলা যায় –

  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ল্যাঙ্গুয়েজ: HTML, CSS, JavaScript, jQuery
  • প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ: C++, C#, Java
  • অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (API): Android, Apple iOS, Windows
  • সাইবার সিকিউরিটি
  • গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI) ডিজাইন
  • গিটহাব (GitHub)

নন-টেকনিক্যাল দক্ষতার মধ্যে দরকার –

  • সৃজনশীল উপায়ে ও যৌক্তিকভাবে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
  • বিশ্লেষণী ক্ষমতা, যা খুঁটিনাটি বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণে সাহায্য করতে পারে
  • নিজে নিজে কাজ করার পাশাপাশি অন্যদের সাথেও কাজ করার মানসিকতা থাকা
  • বিভিন্ন ধরনের কাজ একসাথে সামলানোর দক্ষতা

অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কোথায় শিখবেন?

বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স/ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইনফরমেশন টেকনোলজিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়াশোনার ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন:

  • বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (BUET)
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  • মিলিটারি ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি
  • ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
  • আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
  • শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

এর বাইরে আপনি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের উপর ট্রেনিং নিতে পারেন। যেমন:

একজন অ্যাপ ডেভেলপারের মাসিক আয় কেমন?

সরকারি ক্ষেত্রে নবম গ্রেড অনুযায়ী ৳১৯,০০০ – ৳২২,৫০০। বেসরকারি ক্ষেত্রে এন্ট্রি লেভেলে একজন অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপারের মাসিক আয় ৳২৫,০০০ – ৳৩৫,০০০ হতে পারে।অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে বেতন বেড়ে যায় বহুগুণ।

আপনি যদি দক্ষ অ্যাপ ডেভেলপার হয়ে থাকেন ও আউটসোর্সিং করেন, তাহলে প্রজেক্টের ভিত্তিতে আয় নির্ধারিত হবে। জটিল অ্যাপ্লিকেশন তৈরির ক্ষেত্রে লক্ষাধিক টাকাও পেতে পারেন। তবে এর জন্য ভালো পোর্টফোলিও থাকার বিকল্প নেই।

Leave a Comment