নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ার

একজন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ার পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নকশা করা, তৈরি করা, চালানো বা নির্মূল করার কাজ করে থাকেন। তিনি দলীয়ভাবে কাজ করে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধান বের করেন। তিনি পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্টগুলির দক্ষতা, স্থায়িত্ব বাড়ানোর এবং তা টেকসই করার উপায় বের করেন। এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সম্পন্ন করার সময় পারমাণবিক বিদ্যুৎ ব্যবহারে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিরাপদে পরিবহন করার কাজটিও তিনি তদারকি করেন।

এক নজরে একজন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ার

সাধারণ পদবী:নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ার
বিভাগ:প্রকৌশল বিভাগ
প্রতিষ্ঠানের ধরন:পারমাণবিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান
ক্যারিয়ারের ধরন:ফুল টাইম
লেভেল:মিড, টপ
অভিজ্ঞতা সীমা:কাজের ধরন ও প্রতিষ্ঠান সাপেক্ষে
সম্ভাব্য বেতনসীমা:৩০-৩৫ হাজার, কাজের ধরন ও প্রতিষ্ঠান সাপেক্ষে
সম্ভাব্য বয়সসীমা:কাজের ধরন ও প্রতিষ্ঠান সাপেক্ষে
মূল স্কিল:পারমাণবিক শক্তি প্ল্যান্ট সম্পর্কে খুঁটিনাটি জ্ঞান
বিশেষ স্কিল:ভালো যোগাযোগ দক্ষতা

কোন ধরণের প্রতিষ্ঠানে একজন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ার কাজ করেন?

বাংলাদেশে এই পেশায় নিম্নলিখিত সংস্থাগুলিতে কাজের সুযোগ রয়েছেঃ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ;
  • বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট;
  • সরকারি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট ইত্যাদি।

একজন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ার কী ধরনের কাজ করেন?

  • পারমাণবিক সরঞ্জামাদি , যেমন রিঅ্যাক্টর কোর, রেডিয়েশন শিল্ডিং এবং সংশ্লিষ্ট যন্ত্রানুষঙ্গ নকশা করা বা তৈরি করা;
  • কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা মান পূরণ করে এমনভাবে পারমাণবিক শক্তি সরবরাহের সরাসরি পরিচালনা বা রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম নিশ্চিত করা;
  • পারমাণবিক প্ল্যান্টে ব্যবহার করা পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং নিষ্পত্তির জন্য অপারেশনাল নির্দেশাবলী লেখা;
  • প্ল্যান্টের কাজে আইন ভঙ্গ যাতে না হয় তা নিশ্চিত করা;
  • জরুরি অবস্থার মধ্যে পারমাণবিক প্ল্যান্ট শাটডাউন করার নির্দেশ প্রদান করা;
  • পারমাণবিক দুর্ঘটনা পরীক্ষা করে ও তথ্য সংগ্রহ করে দুর্ঘটনা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ডিজাইন করা;

একজন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?

এই পেশায় কাজ করতে চাইলে নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি অগ্রাধিকারযোগ্য। তবে এছাড়াও প্রকৌশল বা বিজ্ঞানের অন্যান্য বিষয় থেকেও এই পেশায় আসা যায়, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্তঃ

  • কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং;
  • রসায়ন;
  • সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং;
  • ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং;
  • হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারিং;
  • মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং;
  • পদার্থবিদ্যা।

একজন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

  • জটিল অপারেশনাল এবং মনিটরিং সিস্টেম বোঝার জন্য ভাল বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা;
  • নির্মাণ সমস্যা বা মেরামতের কাজ করার জন্য সমস্যা সমাধানের দক্ষতা;
  • গণিত এবং আইটি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান;
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দ্রুতগতির উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে চলার আগ্রহ;
  • কাজের বিষয় সম্পর্কে সহকর্মী এবং বাইরের বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ করার ক্ষমতা;
  • পারমাণবিক শিল্প বা নিরাপত্তা বিষয় সম্পর্কে সাধারণ জনগণের সাথে কথা বলার জন্য ভালো যোগাযোগ দক্ষতা;

কোথায় পড়বেন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং?

বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মিলিটারি ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (MIST) নিউক্লিয়ার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এই বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রকৌশল বা বিজ্ঞানের অন্য বিষয় থেকে পড়েও এই বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করে কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হওয়া সম্ভব। বাইরে থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়েও এই পেশায় যুক্ত হতে পারেন।

একজন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারের কাজের ক্ষেত্র এবং সুযোগ কেমন?

বিজ্ঞানের এক নতুন ও সম্ভাবনাময় দিক হল পরমাণু গবেষণা। বর্তমানে কাজের ক্ষেত্র অপ্রতুল হলেও নিত্যনতুন নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই পেশায় কাজের ক্ষেত্র ও সুযোগ উভয়েই দিন দিন বাড়ছে। এছাড়া এই বিষয়ে গবেষণার ভালো সুযোগ রয়েছে।

একজন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারের মাসিক আয় কেমন?

ট্রেইনি হিসেবে একজন ইঞ্জিনিয়ারের মাসিক আয় ৩০-৩৫ হাজার থেকে শুরু হতে পারে। অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এই বেতন বেড়ে আরও বেশি হতে পারে।

ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে একজন নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারের?

এই পেশায় অফিসে বা সাইটে দুই স্থানেই কাজের সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে তৈরি হওয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্টে কাজ করে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দুই-ই বাড়িয়ে নিতে পারেন। একই সাথে এই বিষয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষাদানকেও কর্মক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিতে পারেন। বিজ্ঞানভিত্তিক বলে প্রচুর গবেষণার সুযোগ রয়েছে এখানে। সেই সাথে গবেষণার ভিত্তিতে কাজের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সাথে সাথে কাজের সম্মানীও বাড়বে। নতুন আবিষ্কার ও গবেষণার প্রতি আগ্রহ থাকলে আপনি এই সম্মানজনক পেশায় যুক্ত হতে পারেন।

Leave a Comment