প্রোডাকশন অফিসার: ফুড অ্যান্ড বেভারেজ

ফুড ও বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রির একজন প্রোডাকশন অফিসার খাদ্য ও পানীয় উৎপাদন প্রক্রিয়ার কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে মান যাচাই ও নিয়ন্ত্রণের কাজে নিযুক্ত থাকেন। বর্তমানে এ পেশার বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে।

এক নজরে একজন প্রোডাকশন অফিসার

সাধারণ পদবী: প্রোডাকশন অফিসার
বিভাগ: ফুড ও বেভারেজ
প্রতিষ্ঠানের ধরন: কোম্পানি
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল টাইম
লেভেল: এন্ট্রি, মিড
এন্ট্রি লেভেলে অভিজ্ঞতা সীমা: ১ – ২ বছর
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য গড় বেতন: ৳২৫,০০০
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স সীমা: ২৫ বছর
মূল স্কিল: ফুড ও বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রি সংক্রান্ত জ্ঞান, উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা
বিশেষ স্কিল: সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, যোগাযোগ দক্ষতা

একজন প্রোডাকশন অফিসার কোথায় কাজ করেন?

ফুড ও বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিতে একজন প্রোডাকশন অফিসার সাধারণত খাবার উৎপাদনকারী কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। যেমনঃ

  • পোলট্রি ও ডেইরি ফার্মে
  • মাছের খামারে
  • খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রকল্পে
  • সফট ড্রিংকস তৈরির কারখানায়

একজন প্রোডাকশন অফিসার কী ধরনের কাজ করেন?

  • গুদাম থেকে কাঁচামাল সংগ্রহের ব্যবস্থা করা;
  • খাবার অথবা পানীয়ের মান যাচাই ও নিয়ন্ত্রণ করা;
  • খাবার বা পানীয় তৈরির প্রক্রিয়া দেখাশোনা করা;
  • স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী খাবার বা পানীয় তৈরি হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে নজর রাখা ও কর্তৃপক্ষকে জানানো;
  • খাবার বা পানীয় তৈরির পরিকল্পনা ও বাজেট তৈরিতে ম্যানেজারকে সাহায্য করা;
  • খাবার বা পানীয় তৈরির সামগ্রিক প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে ম্যানেজারের কাছে নিয়মিত রিপোর্ট দেয়া;
  • রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট দলের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা।

একজন প্রোডাকশন অফিসারের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ সাধারণত রসায়ন, অণুজীববিজ্ঞান বা কেমিকৌশল প্রকৌশলে বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি থাকা লাগে। তবে ইদানিং এ পদে নিয়োগের জন্য ফুড টেকনোলজি অথবা ফুড ইঞ্জিনিয়ারিয়াংয়ে অনার্স বা ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের প্রাধান্য দেয়া হয়।

বয়সঃ প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষে বয়সের সীমা নির্ধারিত হয়। সাধারণত আপনার বয়স কমপক্ষে ২৫ বছর হতে হবে।

অভিজ্ঞতাঃ সাধারণত ৩ থেকে ৫ বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। তবে বিষয়টি কাজ ও প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ।

একজন প্রোডাকশন অফিসারের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

  • খাদ্য বা পানীয় উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে ভালো ধারণা;
  • খাদ্য ও পানীয় সংরক্ষণ সম্পর্কিত জ্ঞান;
  • স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইনের ব্যাপারে জানা;
  • উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পর্কিত জ্ঞান (যেমনঃ Good Manufacturing Practice, Total Productive Maintenance);
  • ব্যবসায়িক রিপোর্ট তৈরি করতে পারা;
  • উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যুক্ত কর্মীদের সাথে যোগাযোগের দক্ষতা।

প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের ক্ষেত্রে আপনার স্নাতক পর্যায়ের থিসিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বিশেষায়িত জ্ঞানের ক্ষেত্র ঠিক করে দেবেন ঠিক কেমন প্রতিষ্ঠানে আপনি কাজ করতে পারবেন। যেমন, আপনার স্নাতক পর্যায়ের থিসিস যদি কোন পানীয় ও সে বিষয়ক রাসায়নিক জ্ঞান নিয়ে হয়, তাহলে পারটেক্স বেভারেজ কিংবা আব্দুল মোনেম লিমিটেডের কোকা কোলা কোম্পানিতে আবেদন করতে পারবেন। আবার থিসিস যদি দুধজাতীয় পানীয় বা খাবারের উপর করে থাকেন, ব্র্যাক ফুড অ্যান্ড ডেইরি প্রজেক্টের মতো কোন প্রতিষ্ঠান আপনার জন্য ভালো হতে পারে।

কোথায় পড়বেন ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি?

আমাদের দেশের বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। যেমনঃ

  • বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
  • ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (DUET)
  • ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, কুষ্টিয়া
  • যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (JUST)
  • সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
  • স্টেট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ
  • জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ

উল্লেখ্য যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভেদে কোর্স ও ডিগ্রি আলাদা হয়।

একজন প্রোডাকশন অফিসারের মাসিক আয় কেমন?

এ পেশায় মাসিক আয় সাধারণত কাজ ও প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে মাসিক বেতন স্বাভাবিকভাবে একটু বেশি। তবে গড় হিসাবে যে কোন প্রতিষ্ঠানে একজন প্রোডাকশন অফিসারকে নিয়োগের সাথে সাথে ৳১৫,০০০ – ৳৩০,০০০ মাসিক সম্মানী দেয়া হয়।

একজন প্রোডাকশন অফিসারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?

একজন প্রোডাকশন অফিসার চাকরি শুরু করেন ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি পদে থেকে। পদোন্নতির মাধ্যমে আপনার পক্ষে সর্বোচ্চ প্ল্যান্ট ম্যানেজার পর্যন্ত হওয়া সম্ভব।

বিশেষ কৃতজ্ঞতা

অনিরূদ্ধ মহালদার, সহকারী মহাপরিদর্শক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

Leave a Comment