বিসিএস অ্যাডমিন

বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারে নিযুক্ত কর্মকর্তারা। উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা, বিভিন্ন ক্যাডারের কাজের মধ্যে সমন্বয় ঘটানো এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আইন রক্ষা, নির্দেশদান ও ক্ষেত্রবিশেষে মোবাইল কোর্ট বা ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯, ধারা ৫) গঠনের ক্ষমতা রাখেন তারা। এ ক্যাডারে নিয়োগ পেলে আপনি শুরুতে সহকারী কমিশনার বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করবেন।

এক নজরে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার

এন্ট্রি লেভেলে সাধারণ পদবী: সহকারী কমিশনার
বিভাগ: পাবলিক সার্ভিস
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল-টাইম
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য অভিজ্ঞতা সীমা: ০ বছর
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য মূল বেতন: ৳২২,০০০ (জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড)
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স: ২১ – ৩০ বছর
মূল স্কিল: সরকারি নীতি সংক্রান্ত জ্ঞান, ব্যবস্থাপনা
বিশেষ স্কিল: যোগাযোগের দক্ষতা, মানসিক চাপ সামলানোর ক্ষমতা

বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা কোথায় কাজ করেন?

একজন সহকারী কমিশনার সাধারণত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কাজ করেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতির আদেশবলে কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮ অনুযায়ী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে নির্বাহী আদালতে বিচারকের দায়িত্বে বসেন।

বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার কাজ কী?

  • জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে অর্পিত নির্বাহী দায়িত্ব পালন করা
  • সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন তদারকি করা। যেমন, গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প,পুনর্বাসন প্রকল্প
  • সিনিয়র সহকারী কমিশনারের অবর্তমানে জেলা প্রশাসনের রাজস্ব, ভূমি অধিগ্রহণ ও জেনারেল সার্টিফিকেট শাখায় দায়িত্ব পালন করা
  • বাস্তবায়িত সরকারি নীতির ফলাফল যাচাই ও ফিডব্যাক প্রদানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে সাহায্য করা
  • এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনাসহ জীবনমান উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিতকরণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা
  • বিভিন্ন কার্যক্রমের অনুমতি দেয়া (যেমন, যাত্রা বা মেলা আয়োজনের অনুমতি)
  • বিভিন্ন লাইসেন্স দানের কাজ তদারকি করা (যেমন, যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন কিংবা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স)

বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারে নিয়োগ পাবার পদ্ধতি কী?

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগ পাবার ক্ষেত্রে আপনাকে –

  • বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় (২০০ নম্বরের পরীক্ষা) উত্তীর্ণ হতে হবে,
  • বিসিএস লিখিত পরীক্ষার (৯০০ নম্বরের পরীক্ষা) জন্য বসতে হবে,
  • সরাসরি মৌখিক পরীক্ষায় (২০০ নম্বরের পরীক্ষা) ভালো ফলাফল করতে হবে।

উল্লেখ্য যে, মৌখিক পরীক্ষার পর চূড়ান্ত ফলাফলে কোন প্রার্থী কোন ক্যাডার পেয়েছেন অথবা নন-ক্যাডার চাকরির জন্য বিবেচ্য হয়েছেন, তার উপরও আপনার পছন্দের ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়া নির্ভর করে।

বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা স্বীকৃত বোর্ড থেকে এইচএসসি পাশের পর ৪ বছর মেয়াদি শিক্ষা সমাপনী ডিগ্রি অথবা সমমানের ডিগ্রি।

কোন প্রার্থীর শিক্ষা জীবনে একাধিক ৩য় বিভাগ/শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ থাকলে বিসিএস পরীক্ষার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

  • সরকারি প্রশাসনকাঠামো ও নীতিমালা সম্পর্কিত জ্ঞান
  • নির্বাহী দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করার দক্ষতা
  • রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনার ক্ষমতা
  • সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
  • যোগাযোগের দক্ষতা
  • মানসিক চাপ সামলানোর ক্ষমতা

বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার মাসিক আয় কেমন?

জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড অনুযায়ী মূল বেতন ৳২২,০০০। কর্মস্থল অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য ভাতা মিলিয়ে মাসিক ৳৩৫,০০০ – ৳৩৭,০০০।

বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগ পেয়ে। আপনার ক্যারিয়ারের ধাপগুলো হতে পারেঃ

  • অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার
  • সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা ইউএনও পদমর্যাদা)
  • ডেপুটি সেক্রেটারি (জেলা প্রশাসক পদমর্যাদা)
  • জয়েন্ট সেক্রেটারি
  • অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি
  • সেক্রেটারি

সরকারের ডেপুটি সেক্রেটারি ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাগণের একটি বড় অংশ আসেন প্রশাসন ক্যাডার থেকে। জাতীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করতে চাইলে আপনি এ ক্যাডারে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন।

9 thoughts on “বিসিএস অ্যাডমিন”

  1. এডমিন ক্যাডারের জন্য নিজেকে ডেভেলপ করার উপায় কী?

    Reply
    • এর জন্য বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় অবশ্যই ভালো নম্বর পেতে হবে। পাশাপাশি যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ান ও ইন্টারভিউর সময় সাবলীলভাবে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন।

      Reply
        • যেহেতু বিভিন্ন ধাপে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়, আমাদের পরামর্শ থাকবে সবার আগে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া।

          Reply

Leave a Comment