বিসিএস পররাষ্ট্র: সহকারী সচিব

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারে এন্ট্রি লেভেলে সহকারী সচিব হিসাবে নিয়োগ পাওয়া যায়। কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরিতে বাংলাদেশ সরকারের একজন প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করার এ পেশায় রয়েছে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ। এ কারণে প্রায় সব বিসিএস পরীক্ষার্থীর পছন্দের তালিকায় এ ক্যাডার উপরের দিকে থাকে।

এক নজরে বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার

এন্ট্রি লেভেলে সাধারণ পদবী: সহকারী সচিব
বিভাগ: পাবলিক সার্ভিস
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল-টাইম
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য অভিজ্ঞতা সীমা: ০ বছর
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য মূল বেতন: ৳২২,০০০ (জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড)
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স: ২১ – ৩০ বছর
মূল স্কিল: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক জ্ঞান, যোগাযোগের দক্ষতা
বিশেষ স্কিল: বিশ্লেষণী ক্ষমতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, মানসিক চাপ সামলানোর ক্ষমতা

একজন সহকারী সচিব (পররাষ্ট্র ক্যাডার) কোথায় কাজ করেন?

নিয়োগের পর প্রত্যেক সহকারী সচিবকে দুই ধাপে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। এর মধ্যে একটি পর্ব থাকে বাংলাদেশ জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। অন্যটি হয় বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে (সুগন্ধা)।

প্রশিক্ষণ শেষে সহকারী সচিবদের বিশেষ জ্ঞান ও ব্যক্তিগত পছন্দের ভিত্তিতে আলাদা আলাদা উইংয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়। যেমনঃ

  • প্রশাসন উইং
  • প্রটোকল উইং
  • গবেষণা উইং

একজন সহকারী সচিব (পররাষ্ট্র ক্যাডার) কী ধরনের কাজ করেন?

উইংয়ের ভিত্তিতে একজন সহকারী সচিবের কাজের ধরন নির্ভর করে। অঞ্চলভিত্তিক উইংগুলোর কাজ সাধারণত একই রকম হয়। উল্লেখ্য যে, প্রশিক্ষণের সাথে সাথে কাউকে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসে নিয়োগ দেয়া হয় না।

অঞ্চলভিত্তিক উইংগুলোতে আপনার কাজ হতে পারেঃ

  • নির্দিষ্ট অঞ্চলের উপর নির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা;
  • গবেষণা উইংয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিকল্পনা ও চুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় খসড়া বানানো;
  • প্রটোকল উইংয়ের ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আগত অতিথিদের দেখভালো করা;
  • প্রশাসন উইংয়ের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করা।

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারে নিয়োগ পাবার পদ্ধতি কী?

পররাষ্ট্র ক্যাডারের সহকারী সচিব হবার জন্য আপনাকেঃ

  • বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় (২০০ নম্বরের পরীক্ষা) উত্তীর্ণ হতে হবে;
  • বিসিএস লিখিত পরীক্ষার (৯০০ নম্বরের পরীক্ষা) জন্য বসতে হবে;
  • সরাসরি মৌখিক পরীক্ষায় (২০০ নম্বরের পরীক্ষা) ভালো ফলাফল করতে হবে।

উল্লেখ্য যে, মৌখিক পরীক্ষার পর চূড়ান্ত ফলাফলে কোন প্রার্থী কোন ক্যাডার পেয়েছেন অথবা নন-ক্যাডার চাকরির জন্য বিবেচ্য হয়েছেন, তার উপরও এ ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়া নির্ভর করে।

একজন সহকারী সচিবের (পররাষ্ট্র ক্যাডার) কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ দেশের কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা স্বীকৃত বোর্ড থেকে এইচএসসি পাশের পর ৪ বছর মেয়াদি শিক্ষা সমাপনী ডিগ্রি অথবা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে আপনার।

শিক্ষা জীবনে একাধিক ৩য় বিভাগ/শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ থাকলে বিসিএস পরীক্ষার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

বয়সঃ সাধারণ ও কোটাভুক্ত প্রার্থীদের বেলায় ২১ – ৩০ বছর। মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পুত্র-কন্যাদের ক্ষেত্রে ২১ – ৩২ বছর।

একজন সহকারী সচিবের (পররাষ্ট্র ক্যাডার) কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

  • আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক জ্ঞান;
  • যোগাযোগের দক্ষতা (বিশেষ করে ইংরেজির উপর ভালো দখল থাকা আবশ্যক);
  • বিশ্লেষণী ক্ষমতা;
  • সমস্যা সমাধানের দক্ষতা;
  • অঞ্চলভিত্তিক উইংয়ে কাজ করে সে অঞ্চল নিয়ে ভালো ধারণা।

উল্লেখ্য যে, কূটনীতিক আলোচনার সময় আপনাকে সবসময় বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রাখতে হবে।

একজন সহকারী সচিবের (পররাষ্ট্র ক্যাডার) মাসিক আয় কেমন?

জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড অনুযায়ী মূল বেতন ৳২২,০০০। পাশাপাশি বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য ভাতাও পান।

কাজের জন্য বিদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে আলাদা সম্মানি বরাদ্দ থাকে।

একজন সহকারী সচিবের (পররাষ্ট্র ক্যাডার) ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?

এ ক্যাডারের জন্য সরকার নির্ধারিত পদবিন্যাস হলোঃ

  • সহকারী সচিব
  • সিনিয়র সহকারী সচিব
  • পরিচালক
  • মহাপরিচালক
  • সচিব

চাকরির অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সরকার চাইলে আপনাকে কোন দেশের দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগ দিতে পারে।

1 thought on “বিসিএস পররাষ্ট্র: সহকারী সচিব”

Leave a Comment