একজন সাইকোলজিস্ট বা মনোবিজ্ঞানী মানুষের চিন্তা, অনুভূতি, ইচ্ছা ও আচরণ পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। তাছাড়া বিভিন্ন মানসিক সমস্যার সমাধানে পরামর্শ দিয়ে থাকেন তিনি।
এক নজরে একজন সাইকোলজিস্ট
সাধারণ পদবী: সাইকোলজিস্টবিভাগ: মনোবিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি, বেসরকারি, প্রাইভেট ফার্ম/কোম্পানি, ফ্রিল্যান্সিং
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল-টাইম, পার্ট-টাইম
লেভেল: এন্ট্রি, মিড
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য অভিজ্ঞতা সীমা: কাজ ও প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য গড় বেতন: ৳১৫,০০০ – ৳২৫,০০০
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স: ২৫ – ৩০ বছর
মূল স্কিল: পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, বিশ্লেষণী দক্ষতা, যোগাযোগের দক্ষতা
বিশেষ স্কিল: গবেষণার দক্ষতা, ধৈর্য সহকারে অন্যের কথা শুনতে পারা
সাইকোলজিস্টের পেশা সম্পর্কিত প্রশ্ন
একজন সাইকোলজিস্ট কোথায় কাজ করেন?
- হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র
- মানসিক স্বাস্থ্য গবেষণা ও সেবা কেন্দ্র
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
- শিল্পকারখানা
- এনজিও
নিয়ম অনুযায়ী শুধুমাত্র ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হাসপাতালে মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিকে সাইকোথেরাপি দিতে পারেন। তবে বাংলাদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাইকোলজিস্টরা এ কাজ করেন।
তথ্যসূত্রঃ ‘WHO-AIMS Report on Mental Health System in Bangladesh‘, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ২০০৬।
বিভিন্ন বেসরকারি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ব্যক্তি পর্যায়ে গড়ে ওঠা কাউন্সেলিং সেন্টারে কাজের সুযোগ পাবেন আপনি। বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন, এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ উদ্বাস্তু, শিশু, নারী ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে কাজ করা আরো অনেক এনজিওতে সাইকোলজিস্টদের চাহিদা রয়েছে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, জাতীয় মানসিক হাসপাতাল – পাবনা, জাতীয় ট্রমা সেন্টার, ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার – ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো বিশেষায়িত চিকিৎসা কেন্দ্রে সাইকোলজিস্টরা কাজ করেন।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন – চট্টগ্রামের কাউন্সেলিং ইউনিটসহ রাজধানীর বড় বড় স্কুল-কলেজে রয়েছে স্কুল সাইকোলজিস্টের পদ। অন্যদিকে স্কয়ারসহ বড় কয়েকটি কোম্পানি ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে।
একজন সাইকোলজিস্ট কী ধরনের কাজ করেন?
একজন সাইকোলজিস্ট মানসিক সমস্যা সমাধানে মানুষকে সাহায্য করেন। অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সমাধান সম্ভব না হলে সমস্যা যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন।
বিশেষায়িত ক্ষেত্র অনুযায়ী একজন সাইকোলজিস্টের কাজে কিছুটা পরিবর্তন আসে। যেমন –
- ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টঃ বহু হাসপাতালে মনোরোগ চিকিৎসকের পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা কাজ করে থাকেন। তারা কথা ও যুক্তির মাধ্যমে মানুষের চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণ পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। এছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে গবেষণা করে থাকেন তারা। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নে তাদের দিকনির্দেশনা বিবেচনায় রাখা হয়।
- কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্টঃ মনস্তত্ত্বের জৈবিক, সামাজিক, ও পরিবেশগত দিক পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ক্লায়েন্টের বর্তমান মানসিক অবস্থার মূল্যায়ন করেন ও সমস্যা সমাধানের পথ দেখান।
- এডুকেশনাল বা স্কুল সাইকোলজিস্টঃ পড়ার চাপের ফলে শিক্ষার্থীদের যেন কোন মানসিক সমস্যা দেখা না দেয়, সে ব্যাপারে তারা খেয়াল রাখেন। এছাড়া বয়ঃসন্ধিকালে শিক্ষার্থীদের মানসিক পরিবর্তনের সময় সহায়তা করেন। পাশাপাশি শিক্ষাদান প্রক্রিয়াকে কার্যকরী ও শিক্ষার্থীবান্ধব করতে গবেষণা করেন।
- ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইকোলজিস্টঃ যেকোন শিল্পে কর্মীদের নানা মানসিক সমস্যার সমাধান ও তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সুস্থ কাজের পরিবেশ তৈরি করতে ভূমিকা রাখেন।
- সোশ্যাল সাইকোলজিস্টঃ মূলত মানুষের গোষ্ঠীগত আচরণের উপর গবেষণা করেন।
- স্পোর্টস সাইকোলজিস্টঃ খেলোয়াড়দের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করেন ও অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকেন।
একজন সাইকোলজিস্টের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ আপনাকে মনোবিজ্ঞানের উপর ৪ বছর মেয়াদী বি.এস.সি. ও এরপর মনোবিজ্ঞানের বিশেষায়িত কোন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিতে হবে। যেমন, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হতে হলে সাইকোলজিতে ৪ বছরের বি.এস.সি. ডিগ্রির পর ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে এম.এস.সি. ও এম.ফিল. ডিগ্রি বাধ্যতামূলক।
কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্টের বেলায় ডিগ্রি বাধ্যতামূলক নয়। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও কোর্স করে দক্ষ হলে যে কেউ এ পেশায় আসতে পারেন।
একজন সাইকোলজিস্টের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?
- ধৈর্য;
- পরিশ্রম করার মানসিকতা;
- ক্লায়েন্টের চিন্তা ও আচরণ পর্যবেক্ষণের সময় ব্যক্তিগত অনুভূতি সরিয়ে রেখে যৌক্তিকভাবে তার মানসিক অবস্থার মূল্যায়ন করা;
- ক্লায়েন্টের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখার দক্ষতা;
- ক্লায়েন্টের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে পরামর্শ দিতে পারা;
- যোগাযোগের দক্ষতা;
- সমাজ সম্পর্কে পরিষ্কার ও বাস্তবিক ধারণা রাখা।
কোথায় পড়বেন সাইকোলজি (মনোবিজ্ঞান)?
বাংলাদেশে বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেয়ার ব্যবস্থা আছে। যেমন –
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মনোবিজ্ঞানে ৪ বছর মেয়াদী বিএসসি. ডিগ্রি দেয়া হয়। এছাড়া স্কুল সাইকোলজি আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল-অরগানাইজেশনাল সাইকোলজি বিষয়ে এমএসসি. ডিগ্রি রয়েছে এখানে। পাশাপাশি দুই বছর মেয়াদী এমফিল ও ৩ বছর মেয়াদী ডিফিল ডিগ্রি নিতে পারেন।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল ও কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগ থেকে এডুকেশনাল ও কাউন্সেলিং সাইকোলজিতে পৃথকভাবে এমএসসি ও এমফিল ডিগ্রি নেয়া যায়।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ থেকে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির উপর সাড়ে তিন বছরের সমন্বিত এম.এস.সি. ও এমফিল ডিগ্রি দেয়া হয়।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে –
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (মনোবিজ্ঞান বিভাগ)
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (মনোবিজ্ঞান বিভাগ)
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (মনোবিজ্ঞান বিভাগ)
- রাজশাহী কলেজ (মনোবিজ্ঞান বিভাগ)
- ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি (ব্যাচেলর অফ আর্টস ইন বিহেভিয়ারিয়াল সায়েন্সেস – সাইকোলজি)
তথ্যসূত্রঃ ‘WHO-AIMS Report on Mental Health System in Bangladesh’, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ২০০৬।
একজন সাইকোলজিস্টের মাসিক আয় কেমন?
সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন দেয়া হয়। বেসরকারি নামীদামী হাসপাতালগুলোতে অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বেতন কয়েক লাখ টাকাও হতে পারে।
পার্ট টাইম কাজের ক্ষেত্রে শুরুতে একজন সাইকোলজিস্টের মাসিক আয় ৳১৫,০০০ – ৳২০,০০০। ফুল টাইমের ক্ষেত্রে তা ৳২৫,০০০ – ৳৩০,০০০।
সাইকোলজি পেশায় ২-৩ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে বিভিন্ন এনজিও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বেতন ৳৪০,০০০ – ৳৫০,০০০ হয়ে থাকে।
কাজের জন্য সুনাম অর্জন করলে কাউন্সেলিং করে মাসে কয়েক লাখ টাকা অর্জন করা সম্ভব।
একজন সাইকোলজিস্টের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৬ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছে। অথচ চাহিদার তুলনায় বাংলাদেশে সাইকোলজিস্টের সংখ্যা কম। এরপরও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের কাজের সুযোগ যেমন আছে, তেমনি আছে গবেষণা করার সুবিধা।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ও গবেষণা ইন্সটিউটিউট, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও বিভিন্ন এনজিও দাতা সংস্থার উঁচু পদে সাইকোলজিস্টরা কাজ করেন।
কাউন্সেলিংয়ে দক্ষ হলে ব্যক্তিগত পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারেন। এছাড়া উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে মনোবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতা পেশায় জড়িত হওয়া সম্ভব।
মনোবিজ্ঞানের উপর কোন শর্ট কোর্স আছে কি?
হ্যাঁ, আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞানের উপর ছয় মাসের কোর্স আছে। ধন্যবাদ। ক্যারিয়ারকী’র সাথেই থাকুন।
Ami Dhaka college theke ‘Psychology’ te honours korechi.akhon ami ki korte pari?
মানবিক বিভাগে পড়ে কি মনোবিজ্ঞানী হওয়া যা??
Commerce theke pore ki psychology pora jabe?
যাবে।
Arts theke SSC, hsc kore University te psychology kora somvob?
Eta mono biggan er e subject
psychologist and psychiatrist কী সেইম প্রোফেশন?
না। সাইকোলজিস্ট আর সাইকিয়াট্রিস্টের মধ্যে বেশ কয়েকটি পার্থক্য রয়েছে।
আমি কি বাড়িতে বই পরে সাইকোলজিস্ট হতে পারি
আপনি বাড়িতে সাইকোলজির বই পড়তে পারেন। কিন্তু সাইকোলজিস্ট হবার জন্য আপনাকে এ বিষয়ে ডিগ্রি নিতে হবে।
Commerce background theke ke psychology pora Jai?
সম্ভব।
আমি এবছর ssc পরীক্ষা দিয়েছি।result GPA5 আমি মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চাই।আমার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে।please give me some advice
বিশ্ববিদ্যালয় অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা আলাদা হয় বলে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোন তথ্য দিতে পারছি না আমরা। আপনি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ও বিষয় তালিকা দেখলে একটা ধারণা পাবেন।
inter a psychology optional subject nile ki versity xm a kuno subidha ase??
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সাইকোলজি পড়তে কিছুটা সুবিধা হবে।
Psychologist hote mot koto khoroch hote pare?
Ar DU te porasuno krte khoroch kmn..?
সাইকোলজিস্ট হবার খরচ প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজি বিষয়ে অনার্স করার জন্য প্রতি মাসে টিউশন ফি হলো ৳৩৬০। তবে এর বাইরে আরো কয়েক প্রকার ফি রয়েছে। পুরোপুরি ধারণা পাবার জন্য আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফির তালিকা দেখে নিন।
Ekjon psychologist eksathe ki ki kaj korte pare? and sob miliye monthly income kmn hobe?
Psychology ki humanities department er subject naki science er biology?
সাধারণত বিজ্ঞান বিভাগের বিষয় হিসাবে গণ্য করা হয়।