বিসিএস কাস্টমস: সহকারী কমিশনার

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (BCS) এর শুল্ক ও আবগারি (CUSTOMS & EXCISE) ক্যাডার বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্যাডার সার্ভিস। এই ক্যাডারেরা মূলত পরোক্ষ কর (ভ্যাট, আবগারি শুল্ক, আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ইত্যাদি) আদায় সংক্রান্ত কর্মে নিয়োজিত।

এক নজরে একজন সহকারী কমিশনার

সাধারণ পদবী: সহকারী কমিশনার
বিভাগ: বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল টাইম
লেভেল: এন্ট্রি
অভিজ্ঞতা সীমা: প্রযোজ্য নয়
বেতনসীমা: জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড অনুযায়ী মূল বেতন ২২ হাজার টাকা। কর্মস্থল অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য ভাতা মিলিয়ে মাসিক ৩৫-৩৭ হাজার টাকা
সম্ভাব্য বয়সসীমা: বিসিএস সার্কুলার যে মাসে দেওয়া হবে সে মাসের প্রথম দিন একজন প্রার্থীর বয়স ২১-৩০ এর মধ্যে হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী ব্যক্তিদের সন্তান ও পৌত্র-পৌত্রীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর
মূল স্কিল: বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক নিয়ে জ্ঞান, আন্তর্জাতিক-জাতীয় কর ও শুল্ক আইন সম্পর্কে ধারণা, প্রশাসনিক কাজে দক্ষতা
বিশেষ স্কিল: বিচক্ষণতা, ধৈর্য, মানসিক চাপ সামলানোর ক্ষমতা, যোগাযোগের দক্ষতা

একজন সহকারী কমিশনার কোথায় কাজ করেন?

একজন কাস্টমস ক্যাডার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অধীন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শুল্ক ও ভ্যাট অণুবিভাগ, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপীলাত ট্রাইব্যুনাল অথবা সরাসরি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কাজ করেন।

একজন সহকারী কমিশনার কী ধরনের কাজ করেন?

একজন সহকারী কমিশনার নিমোক্ত কাজ করে থাকেন-

  • শুল্ক অফিসে অর্পিত প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন
  • নথিপত্র পরীক্ষা করেন
  • চোরাচালান রোধে অভিযান চালান
  • বিনা শুল্কে পণ্য কেনাবেচা বন্ধ করতে বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন
  • শুল্ক আইন অনুযায়ী পণ্যের শ্রেণী বিন্যাস
  • নিয়ম অনুযায়ী পণ্যের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ
  • সমুদ্র, নৌ, রেল ও স্থল বন্দরে বিদেশ থেকে আমদানি ও রপ্তানি কৃত পণ্যের শুল্ক আদায় তদারকি করেন

একজন সহকারী কমিশনারের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?

উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষা পাশের পর কোন স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে ৪ বছর মেয়াদী যেকোন বিষয়ে ডিগ্রী থাকলেই বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারের জন্য যোগ্য বিবেচিত হন। তবে শিক্ষাজীবনের যে কোন পর্যায়ে (মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক) একটির বেশি তৃতীয় বিভাগ থাকলে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

একজন সহকারী কমিশনারের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

  • প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে
  • বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে
  • বাংলাদেশের শুল্ক ও আবগারি আইন সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে
  • বাংলাদেশে শুল্ক বিভাগের কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে
  • চোরাচালান ও শুল্ক আইন অনুযায়ী অন্যান্য বেআইনি কার্যক্রম বন্ধে দক্ষ হতে হবে
  • নিয়ম অনুযায়ী পণ্যের শুল্ক মূল্য নির্ধারণ ও আদায়ে দক্ষ হতে হবে
  • সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা থাকতে হবে

একজন সহকারী কমিশনারের মাসিক আয় কেমন?

কর্মজীবনের শুরুতে একজন সহকারী পরিচালক গ্রেড ৯ অনুযায়ী ৩২-৩৭ হাজার টাকা বেতন পান। এ গ্রেডে সর্বোচ্চ বেতন ৫৩ হাজার টাকা।

একজন সহকারী কমিশনারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?

কাস্টমস ক্যাডারে শুরুতে একজন সহকারী কমিশনার হিসেবে কাজে যোগদান করেন। এ পদে আনুমানিক ৫ বছর কাজের পর একজন সহকারী কমিশনার পদোন্নতি পেয়ে গ্রেড-৬ কর্মকর্তা উপ-কমিশনার হন। গ্রেড-৫ অফিসার যুগ্ম কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি হতে আরো ৫ বছর এবং গ্রেড-৪ কর্মকর্তা অতিরিক্ত কমিশনার হতে আনুমানিক ৪ বছর সময় লাগে। পদ খালি থাকা সাপেক্ষে একজন কাস্টমস ক্যাডার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য গুণের বলে বাংলাদেশ কাস্টমস এর মহাপরিচালক বা কমিশনার হন যা একটি গ্রেড-৩ এর পদ। এর পর একজন কাস্টমস ক্যাডার পদ খালি থাকা সাপেক্ষে ক্যারিয়ারের শীর্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য হন।

অন্য সকল ক্যাডারের মত বিসিএস শুল্ক ও আবগারি ক্যাডারের কর্মকর্তাগণও চাকুরির মেয়াদ ১০ বছর হলে ডিএস পুলে সরকারের উপ-সচিব হবার সুযোগ পান। তারা বিভিন্ন দূতাবাসে ডেপুটেশনে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করতে পারেন। ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে কমিশনার পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তা ৫ বছরের জন্য নিযুক্ত হন।

Leave a Comment