ইমাম

একজন ইমাম মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, শুক্রবার জু’মা নামাজ, ঈদের নামাজ ও খুৎবা পাঠ, জানাযার নামাজ পরিচালনা করেন। এছাড়াও মসজিদভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তাকে কোর’আন শিক্ষা কার্যক্রমেরও দেখভাল করতে হয়। পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদা থাকায় অনেক সময় জাতীয় পুষ্টিকার্যক্রম, জাতীয় ভোটার নিবন্ধন করণ, টিকাদিবসেও তাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হয়।

সারা বাংলাদেশের অসংখ্য মসজিদে বহু ইমাম কাজ করছেন, এছাড়াও প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় অসংখ্য মসজিদ নির্মিত হচ্ছে যেখানে আপনি চাইলেই প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত অর্জনের মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে নিতে পারেন।

এক নজরে একজন ইমাম

সাধারণ পদবী: ইমাম
বিভাগ: ধর্মচর্চা
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি, বেসরকারি
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল-টাইম, পার্ট-টাইম
লেভেল: এন্ট্রি, মিড
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য অভিজ্ঞতা সীমা: প্রযোজ্য নয়
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য গড় বেতন: ৳১৫,০০০ – কাজ, প্রতিষ্ঠান ও অভিজ্ঞতাসাপেক্ষ
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স: প্রযোজ্য নয়
মূল স্কিল:নামাজ পরিচালনা
বিশেষ স্কিল: সচেতনতা তৈরি করা ও কোর’আন শিক্ষা দেয়া

একজন ইমাম কোথায় কাজ করেন?

  • মসজিদ ও মাদরাসায়
  • পুলিশ,নৌবাহিনী,সেনাবাহিনী, বিজিবি সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমাম হিসেবে কাজের সুযোগ আছে যেখানে অন্য সব সরকারি কর্মচারীর মতো বেতন,ভাতা, বোনাস, আবাসন ও রেশনের সুবিধা পাওয়া যায়।

একজন ইমাম কী ধরনের কাজ করেন?

  • দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরিচালনা
  • জু’মার নামাজের খুদবা দেয়া ও নামাজ পড়ানো
  • ঈদের দিন নামাজ ও দোয়া পরিচালনা
  • দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পরিচালনা
  • মৃত ব্যক্তির জানাযার নামাজ পড়ানো ও লাশ সতকারে সাহায্য করা
  • ধর্মীয় বিধিনিষেধ সম্পর্কে সচেতন করা
  • কোরবানীর পশু কোরবানী দেয়া
  • কোরান শিক্ষা দেয়া
  • হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শিক্ষা দেয়া
  • মসজিদ কমিটির কাজের তত্ত্ববধায়ন করা।
  • মসজিদভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা
  • বিভিন্ন জনসচেতনমূলক বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা।

একজন ইমামের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?

ইমামের কাজ করতে হলে সাধারনত মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে কামিল অথবা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় অথবা সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে ইসলাম শিক্ষা বা আরবিতে স্নাতক ডিগ্রিসহ কোরআনে হাফেজ অথবা দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রিধারী হতে হবে।

একজন ইমামের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

  • কোর’আনে হাফেজ হতে হবে
  • আরবি জানা থাকলে অগ্রাধিকার পাবে
  • প্রয়োজনীয় ইসলামী জ্ঞান ও ভাল কন্ঠস্বরের অধিকারী হতে হবে।

কোথায় শিখবেন ইমামের কাজ?

বাংলাদেশের স্বীকৃত যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলাম শিক্ষা/ আরবিতে স্নাতক ডিগ্রিধারিরা ইমামের কাজ করতে পারেন। এছাড়াও তালিকাভুক্ত কওমী মাদ্রাসার ‘দাওরা এ হাদিস’ ডিগ্রিধারীরাও ইমামের জন্য আবেদন করতে পারেন। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কওমী মাদরাসার তালিকা দেয়া হলোঃ

  • আল্‌-জামিয়াতুল আহ্‌লিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম
  • জামিয়া ইসলামিয়া ইব্রাহিমিয়া উজানি মাদ্রাসা কচুয়া, চাঁদপুর,
  • জামিয়া ফকীহুল উম্মাহ মাদরাসা, মান্ডা, মুগদা, ঢাকা

একজন ইমামের মাসিক আয় কেমন?

সরকারী প্রতিষ্ঠানে ইমাম হিসেবে চাকরি শুরু করলে এই পেশায় মাসে ১৬ হাজার (সরকারি পে স্কেল গ্রেড ১৬) থেকে ২২ হাজার টাকা (সরকারি পে স্কেল গ্রেড ৯) আয় হতে পারে। কাজের ধরন ও প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী এই আয় আরও বাড়তে পারে।

একজন ইমামের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?

সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন এ পেশায় রয়েছে সামাজিক পরিচিত ও ভাল আয়ের সুযোগ। অভিজ্ঞতা থাকলে এপেশায় পদোন্নতি পেয়ে আরো উপার্জনের সুযোগ থাকে, এমনকি বিদেশে কাজের সুযোগ আছে- যেমনঃ কাতারে অধিকাংশ মসজিদেই বাংলাদেশই ইমামরা সুনামের সাথে বিগত দুই’দশক ধরে কাজ করে আসছেন। তাই ধর্মীয় ভাবধারায় সম্মানজনক এপেশায় চাইলেই আপনিও গড়তে পারেন আপনার কাংখিত ক্যারিয়ার।

 

Leave a Comment