ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট

একজন ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট বা বীমা প্রতিনিধি বীমা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পলিসির ব্যাপারে ক্লায়েন্টদের অবহিত করেন। এ পেশায় ক্লায়েন্টের প্রয়োজন বুঝে তাকে নিজ প্রতিষ্ঠানের বীমা পলিসির প্রতি আগ্রহী করে তোলাই হবে আপনার মূল কাজ।

ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনা নিয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়ার কারণে ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানে কাজের ক্ষেত্র ও চাহিদা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

এক নজরে একজন ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট

সাধারণ পদবী: ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট
বিভাগ: বীমা
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি, প্রাইভেট ফার্ম/কোম্পানি
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল-টাইম
লেভেল: এন্ট্রি, মিড
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য অভিজ্ঞতা সীমা: ০ – ২ বছর
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য গড় বেতন: ৳১৫,০০০ – কাজ, প্রতিষ্ঠান, কমিশন ও অভিজ্ঞতাসাপেক্ষ
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স: ২৫ বছর
মূল স্কিল: বীমা সম্পর্কে জ্ঞান, সেলসের দক্ষতা
বিশেষ স্কিল: যোগাযোগের দক্ষতা, সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরি করতে পারা

একজন ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট কোথায় কাজ করেন?

ইন্স্যুরেন্স এজেন্টরা দেশের বিভিন্ন বীমা সংস্থায় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকেন। যেমন:

  • জীবন বীমা করপোরেশন
  • আমেরিকান লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি (আলিকো)
  • ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি
  • ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি
  • সানলাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি
  • ফারইস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্স
  • হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স
  • মেঘনা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি
  • সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি
  • গোল্ডেন লাইফ ইনস্যুরেন্স

একজন ইন্স্যুরেন্স এজেন্টের কাজ কী?

  • প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকসংখ্যা বাড়ানোর জন্য সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করা
  • সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের আর্থিক সম্পদ সম্পর্কে তথ্য নেয়া
  • ইন্স্যুরেন্স কভারেজ নিয়ে আলোচনা করা
  • প্রতিষ্ঠানের ইন্স্যুরেন্স সম্পর্কিত বিভিন্ন নীতি ব্যাখ্যা করা
  • ক্লায়েন্টদের বর্তমান ইন্স্যুরেন্স পলিসিগুলো বিশ্লেষণ করা ও প্রয়োজনে সংযোজন বা পরিবর্তন করতে সহায়তা করা
  • ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী ইন্স্যুরেন্স প্রোগ্রাম নির্বাচনে সহায়তা করা
  • পলিসি নবায়ন করতে সহায়তা করা
  • পলিসি বাতিল করতে সহায়তা করা
  • সকল তথ্যের রেকর্ড রাখা

একজন ইন্স্যুরেন্স এজেন্টের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম এইচএসসি বা স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হয়।

বয়সঃ প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষে বয়সের সীমা নির্ধারিত হয়।

অভিজ্ঞতাঃ এ পেশায় অভিজ্ঞদের প্রাধান্য রয়েছে। সাধারণত ১-২ বছরের অভিজ্ঞতা কাজে আসে।

একজন ইন্স্যুরেন্স এজেন্টের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

  • বীমা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা
  • ভালো যোগাযোগ দক্ষতা
  • আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব
  • ধৈর্য ও দূরদর্শিতা
  • কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা
  • মানসিক চাপ সামলানোর ক্ষমতা
  • সুন্দর বাচনভঙ্গি

কোথায় শিখবেন ইন্স্যুরেন্স এজেন্টের কাজ?

ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট হিসাবে কাজ করতে চাইলে আলাদাভাবে কোন প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। স্নাতক পাশ করে অনেকেই এ পেশায় ঢুকছেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করা প্রার্থীও নেয়া হয়।

সাধারণত বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো এজেন্টদের আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ দেয়, যেখানে কোম্পানির বিভিন্ন পলিসি থেকে শুরু করে কীভাবে ক্লায়েন্টদের সাথে আলোচনা করতে হবে – সবকিছু শেখানো হয়।

একজন ইন্স্যুরেন্স এজেন্টের মাসিক আয় কেমন?

ইন্স্যুরেন্স এজেন্টের আয় মূলত হিসাব করা হয় ক্লায়েন্টপ্রতি কমিশন হিসেবে। প্রতি এজেন্টের গ্রাহককে বীমা করানোর নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে। সে অনুযায়ী তিনি কমিশন পেয়ে থাকেন।

চাকরির শুরুতে গড়ে ৳১৫,০০০ – ৳২০,০০০ আয় করা সম্ভব। সেলসের দক্ষতা অনুযায়ী সময়ের সাথে এ আয় বেড়ে যাবে। গ্রাহককে আগ্রহী করে তোলার ক্ষমতা থাকলে এজেন্ট হিসেবে নিজ লক্ষ্য পূরণ করে ভালো আয় করা সম্ভব।

সরকারি জীবন বীমা কর্পোরেশনে চাকরি করলে সরকারি স্কেলে বেতন হয়ে থাকে।

একজন ইন্স্যুরেন্স এজেন্টের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?

বীমা কোম্পানিতে এজেন্ট হিসেবে যোগদান করা হলো এ পেশার প্রাথমিক ধাপ। পরবর্তীতে ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা ডিও, ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার বা ডিএম, মার্কেটিং বা অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (সেলস) ইত্যাদি পদে নিয়োগ পাবেন। উল্লেখ্য যে, পরিশ্রম করার সামর্থ্য ও কাজের দক্ষতা থাকলে এ পেশায় খুব দ্রুত পদোন্নতি লাভ করা সম্ভব। সাথে রয়েছে আকর্ষণীয় আয়ের সুযোগ।

3 thoughts on “ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট”

Leave a Comment